গাজীপুরের শ্রীপুরে ডার্ড কম্পোজিট কারখানার শ্রমিকেরা ৩ মাসের বকেয়া বেতন এবং ঈদ বোনাসসহ বিভিন্ন দাবিতে রাজেন্দ্রপুর-কাপাসিয়া সড়ক ৫ ঘণ্টা অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। এসময় সড়কের উভয় পাশে ৩ কিলোমিটার জুড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
পরে আন্দোলনরত শ্রমিকদের সাথে মালিক বসার প্রতিশ্রুতি দিলে বিকেলে তারা অবরোধ তুলে নেয়। গাজীপুর শিল্প পুলিশের শ্রীপুর জোনের ওসি হুমায়ুন কবির বিষয়টি জানিয়েছেন।
শনিবার (১৩ মে) শ্রীপুর উপজেলার রাজাবাড়ী ইউনিয়নের ধলাদিয়া (সাটিয়াবাড়ী) এলাকায় কারখানার সামনে ওই সড়কের উপর অবস্থান নিয়ে তারা বিক্ষোভ করে।
আন্দোলনরত শ্রমিকেরা জানান, কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের বকেয়া বেতন-ভাতাসহ ঈদ বোনাস, মাতৃত্বকালীন ভাতা, ওভারটাইম ভাতা, উৎপাদন বোনাস, দুই বছরের ইনসেনটিভ ভাতা, রমজান মাসের ইফতারের টাকা, বিনা কারণে যখন তখন শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে তারা বিক্ষোভ করছে। ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত তাদের ওইসব সকল পাওনা বকেয়া রয়েছে।
সুইং অপারেটর চম্পা আক্তার বলেন, তাদের পাওনা দাবি করলে কারখানা কর্তৃপক্ষ দেই দিচ্ছি বলে সময় পার করছে। গত তিন মাস যাবত বেতন না দেয়ায় তারা দোকান বাকি ও ঘর ভাড়া দিতে পারছেন না। ঘর ভাড়া দেয়ার জন্য মালিকেরা চাপ দিচ্ছে। দোকান মালিকেরা তাদের পাওনা টাকার জন্য তাগাদা দিচ্ছেন। অনেক দোকান মালিক বাকি দেয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।
সবিতা রানী জানান, ঈদের আগে অর্ধেক মাসের বেতন দেয়ার ঘোষণা দিলেও কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন না দিয়ে ঈদের আগে ছুটি দিয়ে দেয়। আমরা বেতন না নিয়ে ঈদে বাড়ি যায়। ঈদের পর কারাখানা খোলার পর বকেয়া বেতনসহ সকল পাওনা পরিশোধ করার কথা বলে কর্তৃপক্ষ বার বার সময় দিয়ে আমাদের পাওনা পরিশোধ করছে না। তাই বাধ্য হয়ে আমাদের সড়কে নামতে হয়েছে।
শ্রীপুর থানার ওসি আবুল ফজল মো. নাসিম জানান, সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে পুলিশ বিক্ষোভরত শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে কারখানার সীমানা প্রাচীরের ভিতর নিয়ে যায়। পরে কারখানার মালিক না আসা পর্যন্ত তারা কাজে ফিরবে না বলে জানান।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের শ্রীপুর জোনের ইনচার্জ হুমায়ুন কবির বলেন, আগামীকাল রোববার কারখানা মালিক শ্রমিকদের সাথে বসার প্রতিশ্রুতি দিলে বিকেলে তারা অবরোধ তুলে নেয়।
ডার্ড কম্পোজিট লিমিটেড কারখানার ব্যবস্থাপক (মানব সম্পদ ও প্রশাসন) আকাশ মিয়ার ফোন বন্ধ থাকায় এসব অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
শ্রীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আল-মামুন জানান, শ্রমিকদের সাথে কথা বলে বুঝা গেছে স্থানীয়ভাবে কারখানা যারা পরিচালনা করে (জিএম, পিএম এবং প্রশাসন বিভাগের লোকজন) তাদের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের ক্ষোভ দেখা গেছে। তারা বলছে আমাদের বকেয়া পরিশোধের বিষয়ে আমরা সরাসরি মালিকের সাথে বসতে চাই। আমরা কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে কোনো কথা বলব না। তারা শ্রমিকদের বকেয়া দেই দিচ্ছি বলে ঘুরাচ্ছে। তবে কারখানায় কোনো ধরনের ভাংচুর করেনি।
টিএইচ